ইনানীতে পাঁচ তারকা হোটেল সী পার্লের যাত্রা শুরু

কক্সবাজারের ইনানীতে চালু হল পাঁচ তারকা হোটেল সী পার্ল, যাকে দেশের সবচেয়ে বড় হোটেল বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ‘রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বীচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড’ নামের এই হোটেল উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “এই হোটেলটির মাধ্যমে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট হবে। একই সঙ্গে আরও অনেক বেসরকারি বিনিয়োগ আসবে।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক খান, কয়েকজন স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ইনানীতে পাঁচ তারকা হোটেল সী পার্লের যাত্রা শুরু বৃহস্পতিবার ‘রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বীচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড’ নামের এই হোটেল উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “এই হোটেলটির মাধ্যমে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট হবে। একই সঙ্গে আরও অনেক বেসরকারি বিনিয়োগ আসবে।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক খান, কয়েকজন স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। হোটেলটিতে অর্থায়নকারী ৯টি ব্যাংকের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। সাগরের কোল ঘেঁষে নির্মিতব্য মেরিন ড্রাইভের লাগোয়া ১৫ একর জমির উপর তৈরি হোটেলে রয়েছে ৪৯৩টি কক্ষ। ইন্টারন্যাশনাল টাইম শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে হোটেলটিকে দেশের সবচেয়ে বড় হোটেল বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। হোটেলটি আন্তর্জাতিক ‘লোভার গ্রুপ অব হোটেলসের’ গোল্ডেন টিউলিপ হসপিটালিটি ব্রান্ডের প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড রয়েল টিউলিপের সঙ্গে যুক্ত। গোল্ডেন টিউলিপ বিশ্বের ৪০টি দেশে এক হাজারের বেশি হোটেল পরিচালনা করছে। হোটেলের প্রতিটি কক্ষে ন্যূনতম চারজনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে; প্রতি রাতের সর্বনিম্ন ভাড়া ৯ হাজার টাকা। আধুনিক পর্যটনকেন্দ্রের সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত হোটেলটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এখানে দুটো ‘প্রাইভেট বিচ’ আছে। একটি দেশি ও একটি বিদেশি পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত। হোটেলটির অন্যতম আকর্ষণ ডেসটিনেশন স্পা ও বিভিন্ন ধরনের খাবার। রয়েছে ট্র্যাডিশনাল থাই স্পা, নানা ধরনের অ্যারোমা থেরাপি। রয়েছে আইসক্রিম পার্লারসহ কন্টিনেন্টাল, প্যান এশিয়ান, ইতালিয়ান ও বাংলা ও সি ফুডের আটটি ভিন্ন স্বাদের রেস্তোরাঁ। এছাড়া আছে বাংলাদেশের একমাত্র সানকিন বারসহ ইন্টারন্যাশনাল বার, লবি জুস বার ও ক্যাফে। হোটেলটিতে আছে ১০ হাজার বর্গফুটের ব্যাংকুয়েট হল- যেখানে দেশি-বিদেশি সম্মেলন ও অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। হোটেল নির্মাণে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল হক শামীম। এরমধ্যে ২০০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে যোগান দেওয়া হয়েছে। বাকিটা বহন করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আমিনুল নিজে। ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের যৌথ ঋণের (সিন্ডিকেট লোন) মধ্যে ৯৭ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে ঋণের প্রধান আয়োজক (লীড অ্যারেঞ্জার) প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। বাকি ১০৩ কোটি টাকার অর্থায়ন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, পুবালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক ও মধুমতি ব্যাংক মিলে করেছে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মানুষের আয় বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ পর্যটক বৃদ্ধি ও দেশের পর্যটন খাতের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ কামাল খান চৌধুরী। তিনি বলেন, “কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে সরকারের যে পরিকল্পনা রয়েছে তার প্রেক্ষিতে এখানকার সম্ভাবনা আরও বেশি। সব কিছু মিলে প্রকল্পটিকে গ্রহণযোগ্য মনে হওয়ায় আমরা অর্থায়ন করেছি।” এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজ আহমেদ, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম বলেন, “আমরা আধুনিক পর্যটন ব্যবস্থার সব আয়োজন রেখেছি। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে খাবারে। আটটি রেস্তোরাঁ আছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি স্পাতে। বেশ কয়েক ধরনের স্পার ব্যবস্থা রয়েছে।” কক্সবাজার মূল শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দুরের ইনানী বিচে অবস্থিত এই পাঁচ তারকা হোটেলটির সদস্য যারা হবেন, তারা বিশ্বের দুই হাজার ৫০০’র বেশি পাঁচ তারকা হোটেলে সাত রাত ফ্রি থাকতে পারবে। সদস্যরা ‘এক্সচেঞ্জ ফি’ বিনিময়ের মাধ্যমে এ সেবা উপভোগ করবেন। সী পার্লের সদস্য হতে ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা লাগবে বলেও জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কক্সবাজারে ছোট বড় প্রায় ৪৫০টি আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে, যেখানে মোট রুম রয়েছে ২৭ হাজার। এরপরও পর্যটন মৌসুমে পর্যটকদের আবাসন সংকট তৈরি হয়। সারা বছরে কয়েক লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে আসেন। এছাড়া বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অনুষ্ঠানসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানও এখানেই হয়ে থাকে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url